• শুক্রবার ০৫ জুলাই ২০২৪ ||

  • আষাঢ় ২১ ১৪৩১

  • || ২৭ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৫

আলোকিত ভোলা
ব্রেকিং:
ট্রানজিট তো অলরেডি দেওয়া আছে, ক্ষতিটা কী হচ্ছে? ২০৩৫ সালের মধ্যে পরীক্ষামুলকভাবে হাইড্রোজেন জ্বালানি ব্যবহার হবে পদ্মা সেতুর সমাপনী অনুষ্ঠান শুক্রবার দুদিনের সফরে টুঙ্গিপাড়া যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী দরজা বন্ধ রাখতে পারি না, ট্রানজিট ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ নয়, জিয়া, খালেদা, এরশাদ দেশ বিক্রি করেছেন ৮ জুলাই চীন সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী অর্থবছরের প্রথম একনেক সভায় ১১ প্রকল্প অনুমোদন ব্লু ইকোনমি বাস্তবায়নে এডিবির সহায়তা চেয়েছেন প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক অন্যদের জন্য মডেল: প্রধানমন্ত্রী বন্যার শঙ্কায় আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর পায়রা বন্দরকে কেন্দ্র করে দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে চীনের সহায়তা চায় মাদারীপুরে হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউট, খসড়া নীতিগত অনুমোদন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বোহরা সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ যত্ন-স্বচ্ছতার সঙ্গে বাজেট বাস্তবায়নের নির্দেশ প্রধানমন্ত্রীর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাজেট পাস দেশের ইতিহাস ও সাফল্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ সৃষ্টিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে দুর্নীতি করলে কারো রক্ষা নেই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের বাজেট পাস হচ্ছে আজ

নির্বাচনে সহিংসতার পরিকল্পনা

ডাক পাওয়ার অপেক্ষায় ছিল `বোমা লিটন`

আলোকিত ভোলা

প্রকাশিত: ১১ ডিসেম্বর ২০১৮  

পুরান ঢাকার শীর্ষ সন্ত্রাসী ডাকাত সহিদ 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হওয়ায় দলছুট হয়ে পড়েছিল তার দলের বিস্ম্ফোরক বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত গোলাম হোসেন লিটন ওরফে বুদ্ধ লিটন ওরফে বোমা লিটন। মাঝে সন্ত্রাসী ইমু বাহিনীতে যোগ দিলেও জায়গা করে নিতে পারেনি সেখানে। পরে অন্যের হয়ে একা-একাই চুক্তিতে করে গেছে অপকর্ম। ২০১৩-১৪ সালের রাজনৈতিক সহিংসতায় চুক্তিতে বোমা সরবরাহ করেছে; বিস্ম্ফোরণ ঘটিয়েছে বিভিন্ন এলাকায়।

এবারের জাতীয় নির্বাচনেও 'ডাক পাওয়ার' অপেক্ষায় ছিল বোমা লিটন। প্রস্তুতিও নিয়ে রেখেছিল নির্বাচনী সহিংসতায় বিস্ম্ফোরক সরবরাহ ও বিস্ম্ফোরণের। যারা তাকে কাজে লাগানোর  পরিকল্পনা করেছিল, তাদের কাছে সে ছিল 'বিস্ম্ফোরক বস' বা 'বিস্ম্ফোরকের গুরু'। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। সম্প্রতি রাজধানীর কাফরুল এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ গ্রেফতার করে তাকে। তার পর বেরিয়ে আসে নির্বাচনকে ঘিরে তার সহিংসতার পরিকল্পনা।

ডিবির দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা বলেন, গত আগস্ট মাসে নিরাপদ সড়কের দাবিতে গড়ে ওঠা ছাত্র আন্দোলনেও নাশকতা করেছিল এই লিটন। ওই সময় পুলিশের পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট (পিওএম) কার্যালয়ের গেট আটকে ভাংচুর ও নাশকতায় অংশ নেয় সে। ভিডিও ফুটেজ দেখে তাকে চিহ্নিত করে গ্রেফতারে অভিযান শুরু হয়। গত ৬ ডিসেম্বর গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে বেরিয়ে আসে অপরাধ জগতে দীর্ঘ বছর ধরে লিটনের সংঘটিত বিভিন্ন ভয়ঙ্কর ঘটনার তথ্য। এর পরই তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডে নেওয়া হয়।

ডিবি সূত্র জানায়, ৩৭ বছরের লিটন একটি হাতবোমা তৈরিতে সময় নেয় মাত্র ২০ মিনিট। গত ১৫ বছর ধরে সে ভাড়ায় ডাকাতি, ছিনতাই ও নানা রাজনৈতিক সহিংসতায় বোমা সরবরাহ করছিল। নিজে সরাসরি জড়িত অন্তত ৫০টি বোমা হামলার ঘটনায়। অন্তত ২১টি মামলার আসামি লিটন শুরুর দিকে মাত্র একবার সন্দেহভাজন হিসেবে ধরা পড়েছিল। কোনো মামলায় এবারই প্রথম গ্রেফতার হলো সে। বোমা তৈরি, সরবরাহ ও হামলার গুরুত্বভেদে সে পাঁচ হাজার থেকে শুরু করে ২০ হাজার টাকা নিত।

লিটনকে গ্রেফতার অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সিনিয়র সহকারী কমিশনার শাহাদাৎ হোসেন সুমা বলেন, অন্তত ১৫ বছর ধরে বোমা তৈরি, সরবরাহ ও হামলায় জড়িত থাকলেও লিটন প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগ করত না। একজন সহযোগীর মোবাইল ফোন ব্যবহার করে প্রয়োজনীয় কথা সারত। এভাবে সে ধরাছোঁয়ার বাইরে ছিল এতদিন। দীর্ঘ চেষ্টার পর তাকে স্থানীয় সোর্সের মাধ্যমে চিহ্নিত করে গ্রেফতার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তার অপরাধমূলক কার্যক্রম সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য মিলেছে। তাকে আদালত থেকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে।

গোয়েন্দাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে লিটন বলেছে, ছোটবেলা থেকেই সে পড়ালেখায় ভালো ছিল না। তাই কিশোর বয়সেই পুরান ঢাকায় তার বড় ভাইয়ের মেকানিক ওয়ার্কশপে কাজ শুরু করে। নিজের এলাকা পুরান ঢাকার ওয়ারীর একটি ক্লাবে আড্ডা দিত সে। সেখানেই পরিচয় হয় ডাকাত সহিদের সঙ্গে। এর পর তার দলে ভিড়ে বোমা তৈরির কাজ শেখে এবং এক সময় এ কাজে বিশেষজ্ঞ হয়ে ওঠে।

ডিবির বিভিন্ন সূত্র বলছে, এক সময়ে পুরান ঢাকায় বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসাবাড়ির ডাকাতির ঘটনায় ডাকাত সহিদের সঙ্গে লিটন ওরফে বোমা লিটন ওরফে বুদ্ধ লিটনের নাম আসত। লিটনের কাজ ছিল ডাকাতি ও ছিনতাই করার সময়ে বোমা বিস্ম্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক তৈরি করা। ২০১২ সালে ডাকাত সহিদ র‌্যাবের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হওয়ার পর লিটনও আত্মগোপনে গিয়ে এক পর্যায়ে নিষ্ফ্ক্রিয় হয়ে যায়। পরে ডাকাত সহিদের এক সময়ের সহযোগী সুলতান আহমেদ ইমু সন্ত্রাসী গ্রুপটিকে সক্রিয় করলে সেখানে সক্রিয় হয় লিটন। আবারও দায়িত্ব পায় বোমাবাজির। তবে ইমুর দলে বেশিদিন না থেকে নিজেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলে চুক্তিতে বোমা সরবরাহ করতে থাকে সে। এর মধ্যে গত নভেম্বরে পুরান ঢাকার ধূপখোলা মাঠ এলাকায় ইমু ডিবির সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত হয়েছে।

বোমা লিটনের বাড়ি পুরান ঢাকার লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায়। গত সোমবার সেখানে গিয়ে কথা হয় তার বড় ভাই তারা মিয়ার সঙ্গে। তিনি দাবি করেন, কিশোর বয়সেই তার ভাই খারাপ মানুষজনের সঙ্গে মিশে বিপথে চলে যায়। তবে পুলিশ লিটনকে যতটা খারাপ বলছে, ততটা সে নয়।

তারা মিয়া বলেন, দীর্ঘ বছর লিটনের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। বছরতিনেক আগে তার বাবা মাইনুদ্দিন মিয়া মারা যাওয়ার পর যোগাযোগ হয়। এর পর সে পুরোপুরি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে এসেছিল।

অবশ্য পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেছেন, গত কয়েক বছরে গোলাম হোসেন লিটন ওরফে বুদ্ধ লিটন ওরফে বোমা লিটনের বিরুদ্ধে শুধু ওয়ারী থানাতেই বিশেষ ক্ষমতা আইনে অন্তত ১০টি মামলা হয়েছে।